বশেফমুবিপ্রবি প্রতিনিধি।। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা একজন শিক্ষার্থীর নিজেকে, তার পরিবেশ-প্রতিবেশ, মানুষ, সমাজ, সংস্কৃতি, ভাষা, সাহত্যি, কৃষ্টি, শিল্পকলা, দেশ, ইতহিাস-ঐতিহ্য, মানুষের জীবন সংগ্রাম, মানব সভ্যতা ইত্যাদি সর্ম্পকে জানার সুযোগ করে দেয়। শিক্ষা একজন মানুষকে সচেতন, সংবেদনশীল, নৈতিক, সৃষ্টিশীল, আত্মপ্রত্যয়ী ও মানবিক গুণে গুণান্বিত করে তোলে। আর সুশিক্ষার মূলে থাকে দেশ, মানুষ ও মানবকল্যাণ। এই ক্ষেত্রে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। পাকিস্তানী শাসন আমলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালীর জাতীয় মুক্তির সংগ্রামের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালীদের জন্য একটি গণতান্ত্রিক, মানবকল্যাণকামী, অসাম্প্রদায়কি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। শাসকগোষ্ঠীর ঔপনিবেশিক ধাঁচের প্রতক্রিয়াশীল শক্ষিানীতি বিরোধী বাংলার ছাত্র-সমাজের শিক্ষা আন্দোলন জাতীয় মুক্তির বৃহত্তর আন্দোলনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শুধু স্বাধীন বাংলাদশেরে স্বপ্নই দেখেননি , তিনি একটি উন্নত-সমৃদ্ধ সুখী বাংলাদশে, তাঁর কথায়, ‘সোনার বাংলার’ স্বপ্নও দেখেছিলেন । তিনি বলতেন, ‘সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই।’ অর্থাৎ দক্ষ, যোগ্য, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক, আধুনিক, শিক্ষিত সন্তান বা মানবসম্পদ। আর তা সৃষ্টির জন্য থাকা চাই সত্যিকার মানুষ গড়ার শিক্ষা বা সুশিক্ষা।
যুগের সঙ্গে সমান তালে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেফমুবিপ্রবি)। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এ বিদ্যাপিঠটি সকল প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে অদম্য শক্তি এবং আত্মবিশ্বাসী যোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে চলছে বশেফমুবিপ্রবি। জামালপুরে অবস্থিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে সফলতার সাথে এক বছর অতিবাহিত করেছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুর সফলতার এক বছর পূর্তিতে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ। উক্ত আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার খন্দকার হামিদুর রহমান এবং সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ড. এ.এইচ.এম মাহবুবুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীযৃন্দ, এসময় প্রক্রিয়াধীন মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রফিকুল বারী মামুন, ড. মাহমুদুল হাসান, মোঃ মোখলেসুর রহমান, ড. আব্দুস সাত্তার, মো. ফরহাদ আলী, পার্থ সারথি দাস, মোঃ ফখরুল ইসলাম চৌধুরী, সৈয়দ আরিফুল হক, সুমিত কুমার পাল, রায়হানা রহমান লতা, মিজানুর রহমান, মোঃ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও কর্মকর্তা -কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।
প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপদানের সাথে যারা জড়িত সকলকে। আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি জামালপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মির্জা আজম এমপির প্রতি যিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং করছেন। তথ্য-প্রযুক্তরি র্সবােচ্চ ব্যবহারে বিশ্ববিদ্যালয়টি ধারণ করবে এক আধুনকি রূপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য-উদ্দশ্যে বাস্তবায়নে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় সাধনকল্পে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মানের দিক দিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাঙ্গনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার লক্ষ্যে কাজ করছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদশে সরকাররে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে, জামালপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য তৎকালীন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়ীত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ৩০ জানুয়ারী ২০১৭ তারিখে নিয়মিত মন্ত্রীসভায় জামালপুর জেলায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের নীতি পাশ হয়, যেটির সভাপতিত্ব করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনিা। ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর তারিখে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনকল্পে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে এবং আইনটি ২০১৭ সনের ২৪ নং আইন হিসেবে গণ্য। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর বর্তমান প্রাগ্রসর বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা র্অজন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা ও আধুনকি জ্ঞানচর্চা, বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যথাযথ গুরুত্ব প্রদানসহ পঠন-পাঠন ও গবষেণার সুযোগ সুবধিা সৃষ্টি ও সম্প্রসারণকল্পে জামালপুরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়ছে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি ২০১৭ সালের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১০ এর উপধারা ১ অনুযায়ী রাজশাহী বশ্বিবদ্যিালয়রে ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) পদে নিয়োগ দিয়েছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রচেষ্টায়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের বিশেষ অনুদানের প্রেক্ষিতে ৪টি অনুষদে ৪টি বিভাগে স্নাতক সম্মান র্পযায়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ৪টি অনুষদে ৫টি বিভাগে স্নাতক সম্মান পর্যায়ে ভর্তির জন্য আবদেন ফরম ছাড়া হয়ছেে যার ভর্তি পরীক্ষা ২৯ নভেম্বর ২০১৯ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।